December 28, 2024, 12:28 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা গাজী আনিস শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর সোয়া ছয়টার দিকে মারা গেছেন। কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গাজী আনিসুর রহমান কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজার এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে।
নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. আইউব হোসেন।
একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগকৃত এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ফেরত না পাওয়ার হতাশায় গাজী আনিস সোমবার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যায়।
গাজী আনিসের পরিবার জানান হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে তিনি এক কোটি ২৬ লাখ টাকা পেতেন। এ নিয়ে কয়েকবার সংবাদ সম্মেলনও করেন। টাকা ফিরে না পাওয়ার হতাশায় তিনি এটা করেছেন। এছাড়া বর্তমানে তিনি আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন।
আনিসের ভাইগাজী নজরুল ইসলাম জানান তার ভাই হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
গত ২৯ মে গাজী আনিস প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি জানান, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রেই ২০১৮ সালে কলকাতা হোটেল বালাজিতে একইসঙ্গে অবস্থানকালে ঐ দম্পতি তাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগের এবং যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আনিস প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। পরে আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি (অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেয়া)।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি, তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা গড়িমসি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার তাদের লোকজন দ্বারা আমাকে হেনস্তা ব্ল্যাকমেইল করেন এবং করার চেষ্টা করেন। বর্তমানে লভ্যাংশসহ তার ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে ঐ দম্পতিকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন, যা বিচারাধীন।
নিহতের স্বজনরা জানান, আনিস কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বসবাস করতেন। তিনি পানি-গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতেন। মাঝে মধ্যে ঢাকায় যেতেন, সেখানে হোটেলে থাকতেন। তার তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। তারা মায়ের সাথে যশোরে বসবাস করেন, সেখানের পড়াশোনা করে মেয়েরা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা তেমন কিছুই জানেন না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মঙ্গলবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
Leave a Reply